নিম পাতার অজানা 20 টি উপকারিতা

নিম পাতার অজানা 20 টি উপকারিতা:

আমাদের দেশের বহুল পরিচিত একটি গাছের নাম হল নিম গাছ ৷ আমরা সকলেই গাছটির নাম জানি ৷ কিন্তু আমরা এই গাছের পাতার উপতারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানিনা ৷ নিম পাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে; যেটা আমাদের অনেকেরই অজানা ৷ তাই এই পোষ্টে নিম পাতার উপকারিকা সম্পর্কে আলোচনা করবো ৷ আশা করি সকলের উপকারে আসবে ইনশাআল্লাহ ৷

নিম বড়ই উপকারী গাছ ৷ তাই একে হাকিমও বলা হয় ৷ এই নিম দিয়ে মানুষের পা থেকে মাথা পর্যন্ত চিকিৎসা করা সম্ভব হয় ৷ এমনকি বাড়িতে এই নিমের গাছ থাকলে পোকা - মাকরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ৷ নিমের বাতাসও খুব স্বাস্থকর ৷
নিম পাতার রয়েছে অনেক উপকারিতা ৷ এখানে ব্যবহার বিধিসহ কয়েকটি উপকারিতা উল্লেখ করছি:

(1) নিমের পাতা পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে চর্ম রোগ নিরাময় হয় ৷ ফোড়া - ফুস্কুড়ি, চুলকানি ইত্যাদি সেরে যায় ৷ ঘা হলে নিম পাতা বেটে দিলে উপকার পাওয়া যায় ৷

(2) শুকনো নিমের পাতা পুড়িয়ে ঘরে ধোঁওয়া দিলে মশা - মাছি এবং অন্যান্য পোকা -মাকড় দূর হয়

(3) নিম পোড়ানোর পর তার ছাই ক্রিম বা ভেসলিনের সাথে মিশিয়ে মুখে মাখলে ব্রণ -ফুস্কুড়ি ইত্যাদি নিরাময় হয় ৷

(4) নিমের পাতার রস বের করে তাতে তুলো ভিজিয়ে চোখের ওপর রাখলে চোখের লাল ভাব, চেখ জ্বালা নিবারন হয় ৷
(5) ফোড়া যদি পেকে ফেটে যায় তাহলে নিমের পাতা থকথকে করে থেঁতো করে নিয়ে ফোড়ার ওপর লাগিয়ে পটি বেধে দিলে আরাম পাওয়া যায় ৷ ফোড়াও দ্রুত শুকিয়ে যায় ৷

(6) নিমের পাতা বেটে হাতে ও পায়ে তেলের মত লেপন করলে হাত -পায়ের জ্বালা নিবারন হয় ৷

(7) নিমের রস মধুতে মিশিয়ে চেটে খেলে পেটের কৃমি মরে যায় ৷

(8)  নাক দিয়ে রক্ত পড়লে বা নাসা রোগ হলে নিমের ছাল পানি দিয়ে বেটে গাঢ় প্রলেপ তৈরি করে এই প্রলেপ মাথায় লাগালে নাসা রোগ (নাক দিয়ে রক্ত পড়া)  সেরে যায় ৷

(9) রোজ সকালে নিমের ডালের দাঁতন (মিসওয়াক)  করলে দাঁত মজবুত থাকে ৷ দাঁত ঝকঝকে হয় ৷ পায়রিয়া বা দন্তক্ষয় রোগ হতে পারেনা ৷

(10) যদি অনবরত বমি হয় তাহলে 25গ্রাম পরিমাণ নিমের পাতা বেটে ঐবাটার মধ্যে 5 -6দানা গোলমরিচ মিশিয়ে আধকাপ পানিতে গুলে একবারে পান করলে বমি বন্ধ হয়ে যায় ৷

(11) চুলকানি, পাচড়াতে নিমের পাতা খুবই ফলপ্রদ ৷ পাচড়া হলে নিমের কিছু কচি পাতা এবং কিছু গুটি কয়েক গোলমরিচ এক সঙ্গে বেটে (সমমাত্রায়) প্রতিদিন সেবন করুন ৷ পাচড়া শুকিয়ে এলে নিম পাতা দিয়ে ফোটানো পানিতে গোসল করুন এবং পাচড়াতে নিমের তেল লাগান ৷ এতে খুবই ফলপ্রদ হবে ৷

(12) নিমের ছাল, সূঠ এবং গোলমরিচ সমমাত্রায় নিয়ে গুড়ো করে প্রতিদিন সকালে এই চুর্ণ 20গ্পাম মাত্রায় টাটকা পানির সঙ্গে সেবন করলে অম্ল পিত্তর সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ৷

(13) গরুর দুধের মধ্যে নিমের তেল মিশিয়ে পান করলে প্রদর রোগ নাশ হয় ৷ এছাড়া নিমের বীজ পানিতে ভিজিয়ে বেটে পুটলি করে যোনির ওপর রাখলে যোনির ব্যথা নিরাময় হয় ৷

(14) 50 গ্রাম নিমের পাতাতে 4 -5 টা গোলমরিচ মিশিয়ে বেটে নিন ৷ ঐ বাটা এবার এক গ্লাস গরম পানিতে ভালো করে গুলে রোগীকে সেবন করালে ম্যালেরিয়া সেরে যায় ৷

(15) গরমের দিনে নিমের পাতার শরবত তৈরি  নিজেও খান এবং অপরকেও খাওয়ার পরামর্শ দিন ৷ এতে শরীর,মন শান্ত হয়,  ঠান্ডা হয় এবং রক্ত পরিস্কার হয় ৷

(16) 50 গ্রাম নিমের পাতা বেটে নিয়ে তাকে একটা ট্যবলেট বা গুলির মতো তৈরি করে একে পুলটেসের মত ফোড়ার ওপর লাগালে ফোড়া সেরে যায় ৷
ফোড়াতে যদি পুঁজ হয়ে গিয় থাকে , তাহলে নিমের পাতার সঙ্গে সমপরিমাণ গোলমরিচ গুড়ো করে দিয়ে ফোড়াতে লাগালে ফোড়া দ্রুত শুকিয়ে যাবে ৷

(17) 20 -25 টা নিমের মুকুল বা কচি পাতা নিন৷ পরিস্কার এবং নিখুত হওয়া চাই ৷ এই কচিপাতাগুলোর সঙ্গে 10 -12 টা গোলমরিচ মিশিয়ে 60 গ্রাম পানিতে পিষে নিয়ে সকাল- সন্ধা পান করলে রক্ত পরিস্কার হয় ৷

(18) নিমের পাতা দিয়ে ফুটানো পানি দিয়ে সপ্তাহ খানেক বগোল ধৌত করলে বগলের দর্গন্ধ দূর হয়৷

19 নিমের তেল প্রতিদিন মাথায় মাখলে মাথার উকুন ও নিকি মরে যায় ৷অন্তত 8 -10 দিন মাখতে হবে ৷

(20) নিমের মলম তৈরি করার নিয়ম:
50 গ্রাম নিমের পরিস্কার, নিখুত পাতা 500 গ্রাম ঘিয়ে দিয়ে উনানে চাপান এবং পাতা গুলো কালো না হওয়া পর্যন্ত গরম করতে থাকুন   ৷ পাতা কালো হয়ে গেলে নামিয়ে মিশ্রণটাকে ভালো করে নেড়ে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন ৷ যে কোন ঘা, তা যত পুরনোই হোক নিয়মিত 2 বার লাগালে ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ৷ যে সমস্ত ঘা - ফোড়া শত চিকিৎসা সত্ত্বেও সারেনা বা খারাপ ধরনের ঘা তা এই মলম ব্যবহারে সেরে যায় ৷
তবে এই মলম ব্যবহার করার আগে উপরিউক্ত নিমের পানিতে জায়গাটা ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে ৷

ডা: টি ভুট্টাচার্য এর দিক নির্দেশনা অবলম্বনে ৷

0 Comments