খরগোসের গোশত খাওয়ার শরয়ী হুকুম


খরগোসের গোশত খাওয়ার ব্যপারে ওলামায়ে কেরামের দুটি মতামত রয়েছে:
(1) অধিকাংশ ওলামাদের ঐক্যমতে খরগোশের গোশত হালাল৷ 
(2)কিন্তু এক বর্ণনা অনুযায়ী মাকরুহ ৷ এই বর্ণনার বর্ণনাকারী হলেন ইবনে উমর রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু এবং ইবনে আবু লায়লা ৷  

যারা হালাল বলেন তারা দলীল হিসেবে নিম্নোক্ত বর্ণনাটি প্রমাণ পেশ করেছেন৷   
আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেন; আমরা একদা মাবরুজ্জাহরান নামক স্থানে শিকারের জন্য একটি খরগোশ কে অনুসরণ করলাম ৷ আমি দৌড়ে গিয়ে ওকে ধরে ফেলতে সক্ষম হলাম ৷ একে আবু তালহার নিকট নিয়ে গেলাম ৷ আবু তালহা  তাহা জবাই করলেন এবং এর দুটি রান ও একটি পাছা  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পাঠালেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম তা কবুল করলেন ৷

 বুখারী শরীফের এক বর্ণনায় আছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো কবুল করে তা আহার করলেন৷  আরেক বর্ণনায় আছে,  আমি একজন শক্তিশালী যুবক ছিলাম আমি একটি খরগোশ শিকার করলাম এবং তার গোশত রান্না করলাম ৷
হযরত আবু তালহা আমাকে দিয়ে খরগোশের একটি রান নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে প্রেরণ করেন ৷ অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে খরগোশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তা হালাল বলেছেন ৷
 মুহাম্মদ ইবনে সফওয়ান রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু  দুটি খরগোশ শিকার করে এগুলো জবাই করলেন ৷ এ সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশরিফ আনলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো খেতে আদেশ করলেন৷ 

দ্বিতীয় দলের প্রমাণ :
যে সমস্ত ওলামায়ে কেরাম খরগোশের গোশত মাকরুহ বলেছেন যেমন ইবনে আবু লাইলা এবং তার সমর্থক আরো অনেকেই৷ তিনারা এই হাদিস দলিল হিসেবে পেশ করেন যে,  হাব্বান ইবনে জুয রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনি খরগোশ এর ব্যাপারে কি বলেন? তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আমি তা খাবোওনা আবার একে হারাম ও বলি না ৷  আমি আবার বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ এর কারণ কি? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন  আমার বিশ্বাস যে তার  (খরগোশের) ঋতুস্রাব হয়৷ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম গন্ডারের হুকুম কি? নবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন গন্ডার আবার কে খায়? 

ইমাম তিরমিজি রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মতে এই হাদীসের সনদ শক্তিশালী নয় ৷  ইমাম দামেরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এমন কোনো দুর্বল হাদিসও নেই, যার মধ্যে খরগোশ হারাম হওয়ার ব্যাপারে দলিল আছে ৷
 অতএব বুঝা গেল যে খরগোশের গোশত খাওয়া সম্পূর্ণরূপে হালাল ৷  তবে যদি কারো রুচির ভিন্ন হয় তাহলে তা ভিন্ন কথা ৷ 
 উল্লেখ্য চারটি প্রাণী এমন আছে যেগুলোর ঋতুস্রাব হয় যেমন (এক) নারীর (দুই) গন্ডার( তিন) (বাদুড়) এবং( চার)  খরগোশ ৷

0 Comments